লেডিস ভিউ, ন্যাশনাল পার্ক, কিলার্নি , আয়ারল্যান্ড

আমার পিএইচডির কনফারেন্সের সূচনা হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের মনোরম গ্র্যান্ড সাউদার্ন হোটেল, কিলার্নি শহরে। গত ৮-১০ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে আমার প্রথম কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। কনফারেন্স সমাপ্তির দিন, অর্থাৎ ১০ নভেম্বর, আমি একটু সময় নিয়ে কিলার্নির রূপ লাবণ্য উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। যেহেতু আমার বাস ছাড়ার আগে হাতে প্রায় ৩/৪ ঘণ্টা সময় ছিল, যা আমি নির্দ্বিধায় কিলার্নি শহরকে দিতে পারি। সৌভাগ্যক্রমে কনফারেন্সের হোটেলে একজন সহযাত্রীর সাথে পরিচয় হয়, সেই মেয়েটি ঠিক আমার মতোই এই সুন্দর শহরটিকে ঘুরে দেখতে চান। তো তার গাড়ি থাকায় আমরা দু'জনে মিলে ঘুরতে বের হয়ে যাই।

গাড়ি চলতে চলতে এক সময় কিলার্নি ন্যাশনাল পার্কের অন্তরালে প্রবেশ করলো। কী যে অপরূপ সেই  দৃশ্যপট! যা দেখে চোখ-মন জুড়িয়ে একাকার। মনে হচ্ছিল, এই মনোহর পথে যদি পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারতাম! পাথরে পাথরে ঝর্ণার জলরাশির শব্দ আর জলের লাস্যময়ী নৃত্য একজন প্রকৃতি প্রেমীর মনে সহসাই উচ্ছ্বাস জাগিয়ে তোলে। দূরে পাহাড়ের বিশালতা দেখে মনে হতো, যেন হাত বাড়ালেই তাকে ছুঁয়ে দিতে পারবো, কিন্তু আদতে পাহাড় যে যোজন যোজন দূরে!   


কিলার্নির ন্যাশনাল পার্কের এই পথ, যেখানে সোনালি পাতার বিচরণ এবং আমার উপস্থিতি মিলে মিশে এক অপূর্ব আলোকচিত্রী রচনা করেছে। আমি সত্যিই প্রকৃতির এই মোহনীয় আবেশে অভিভূত! 

চলে এলাম লেডিস ভিউ পয়েন্টে। কিলার্নির ন্যাশনাল পার্কের এ আরেক মনোরম দর্শনীয় স্থান, যা ইতিহাস হয়ে রয়েছে। এই স্থান এই অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য রানী ভিক্টোরিয়ার লেডি-ইন-ওয়েটিংদের প্রশংসা পেয়েছিল, যখন রানী ভিক্টোরিয়া ১৮৬১ সালে রাজকীয় সফরে এসেছিলেন। সেই থেকে এর নাম-- লেডিস ভিউ এবং আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম পরিচিত স্থান। এর চারপাশের উপত্যকার নীল আকাশ বিস্তৃত দৃশ্য মনোমুগ্ধকর! 



যখন একজন প্রকৃতি প্রেমী এরকম অপরিসীম সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে খুঁজে পায়, তখন পৃথিবীর তাবৎ মোহ ভুলে শুধুই এই প্রকৃতিতে মগ্ন থাকে। এই ছবিগুলিতে ধরা পড়েছে সেই অনুভূতির সজীব প্রতিচ্ছবি।




কিলার্নির হৃদয় স্পন্দন, সুন্দর মুহূর্ত, এবং প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য মিলে এক অনন্য রচনা রচিয়ত হয়ে রইলো আমার এই ব্লগে।

No comments

Powered by Blogger.